শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন
মোঃ মানিক মিয়া, জামালগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় মৃত ব্যক্তি ও অমৎস্যজীবিদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠন করা হয়েছে। মূত ব্যক্তি ও অমৎসজীবীদের নিয়ে গঠিত হরিপুর শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ কর্র্তৃক করালজাল গ্র“প জলমহালের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৪২৪-১৪২৯ বাংলা সন মেয়াদে ইজারা বাতিলে সোনাপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর। শুক্রবার সকালে বেহেলী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরিপুর গ্রামে মৃত কৃষক ও নোয়াগাও গ্রামের মৃত ব্যক্তি, পোষাক শ্রমিক, দিনমুজুর, ব্যবসায়ী ও অবঃ প্রাপ্ত শিক্ষকের নাম দিয়ে হরিপুর শাপলা মৎস্য সমবায় সমিতি লিঃ গঠন করা হয়। শাপলা সমিতির সদস্য মৃত গৌরাঙ্গ রায়ের পুত্র হরিপদ রায় (৭৪) বলেন, মৃত অনন্ত সরকার, পিতা মৃত জগৎ সরকার আমাদের গাঁয়ের বাসিন্দা বটে, গত ৫/৯/২০১০ সালে সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃতের স্ত্রী বিধবা ভাতা পাচ্ছে। একই গ্রামের নিকঞ্জী বিহারী রায় (৮৫) পিতা মৃত গিরেন্দ্র কুমার রায় বলেন, মৃত কবি রঞ্জন সরকার, পিতা মৃত কালি কুমার সরকার পাশ্ববর্তী গ্রামে নোয়াপাড়া গ্রামের ১৫/৭/২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সদস্য দেবব্রত রায় (২২) পিতা গৌরচাদ রায় বলেন, আমি হলফনামা দিয়েছি শাপলা সমিতির সভাপতি আমাকে ভুল বুঝিয়ে সদস্য করেছে, আমি ভুয়া শাপলা মৎস্যজীবি সমিতির সদস্য পদ থেকে অব্যাহিত নিতে চাই। গ্রামের যুবক অর্জুন রায় (২২) পিতা নিত্য রঞ্জন রায় বলেন, ভুয়া স্বাক্ষর ও মৃত ব্যক্তির নাম দিয়ে গত বছর শাপলা সমিতি গঠন করা হয়, যার নিবন্ধন নং-সুনাম ০৫৪/১৬। শাপলা সমিতি সদস্য কৃপেশ তালুকদার, দানেশ সরকার কৃষি কাজ করেন, সুনীল সরকার ঢাকায়, গৌরচাঁদ রায় সাবেক শিক্ষক, প্রকৃতপক্ষে মৎস্যজীবি হাতে গোনা দুই-চারজন। গ্রামের কলেজ ছাত্র মাওন রায় (২২) বলেন, মৃত ব্যক্তিদের ১ জন মারা গেছেন প্রায় ৭ বছর পূর্বে, অপর মৃত ব্যক্তি ৪ বছর পূর্বে মারা যান, কি করে ওই মৃত ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে সমিতির সদস্য করা হয় এবং স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক মৃত ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান অসীম চন্দ্র তালুকদার ও ইউপি সদস্য মশিউর রহমান এবং সুফিয়ানের যৌথ স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগকারী সোনাপুর মৎস্যজীবি সমিতির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সরকারি জলমহল নীতি-২০০৯ এর পরিপন্থি, এতে প্রকৃত মৎস্যজীবি জলমহাল ইজারা থেকে বঞ্চিত। হরিপুর শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির লিঃ করালজান গ্র“প জলমহালটি ১৪২৪-১৪২৯ বাংলা সন মেয়াদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দীর্ঘ মেয়াদী ইজারা পাওয়ার আবেদন বাতিল করা প্রয়োজন, তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
হরিপুর শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিমল সরকারে সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার সমিতিতে মৃত ব্যক্তি ও শিক্ষক রয়েছেন। উপজেলা মৎস্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করছি, তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ আবুতাহের বলেন, মৎস্য কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র পেয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগ সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূণ কুমার চক্রবর্তী বলেন, হরিপুর শাপলা সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।